top of page

জাইকা: আমরা কি একই দাবি করতে পারি না?

জাপান সরকার ও জাপানি  কোম্পানিগুলো নিজেদের প্রতিশ্রুতিগুলো রক্ষা করবে, তা কি জাপানের মানুষ আশা করতে পারে না?

 

তারা কি আশা করতে পারে না তাদের বাসস্থান ও জীবিকা নিরাপদ রাখার?

 

বিশুদ্ধ বাতাসে সবসময় শ্বাস নেওয়ার?

অবশ্যই পারে।

তাহলে আমরা, মাতারবাড়ির মানুষরা কি একই আশা করতে পারি না?

JICA has broken Japan's vow to stop coal financing

কিন্তু এ বছর জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকা বলছে,
"না, তোমরা পারো না!"

কারণ কয়লাতে জাপানের বিনিয়োগ বন্ধের যে প্রতিশ্রুতি সেটা জাইকা-ই ভঙ্গ করেছে।

 

জলবায়ু রক্ষায় প্রতিশ্রুতির পরেও জাপানের উন্নয়ন সংস্থাটি বাংলাদেশের একটি উপকূলীয় অঞ্চলে মাতারবাড়ি-২ নামে  নতুন একটি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে  বিনিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

 

তবে, সুমিতমোর মতো বড় জাপানি কোম্পানি তার জলবায়ু প্রতিশ্রুতি রক্ষায় সম্প্রতি মাতারবাড়ি-২ নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে

 

মাতারবাড়ি-২ একটি বড় এনার্জি হাবের অংশ যা ইতিমধ্যেই ২0,০০০ লোককে স্থানচ্যুত করেছে। আরও ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে এখান থেকে ছড়ানো বিষাক্ত রাসায়নিকের কারণে ১৪,০০০ মানুষের অকাল মৃত্যু হতে পারে।

 

প্রকল্পটির প্রভাব মূল্যায়নের একটি সমীক্ষা  মাতারবাড়ি-১ প্রকল্পের জন্য তৈরি করা হয়েছিল যা ত্রুটিপূর্ণ, সেখানে পারদ ও ক্ষুদ্র কণা (মার্কারি ও পিএম ২.৫) নির্গমনের বিষয়টি বিবেচনাই করা হয়নি।

 

ফলে এখন চট্টগ্রামের মাতারবাড়ি অঞ্চলের ৭০ লাখেরও বেশি মানুষের অতিরিক্ত মার্কারি এবং সালফার ডাই অক্সাইড নির্গমনের সংস্পর্শে আসার আশঙ্কা রয়েছে।

 

এর ফলে মাতারবাড়ি কয়লা প্রকল্প থেকে হাজার হাজার মানুষের হৃদরোগের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যা তৈরির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

I can't cast my net due to Matarbari project

"বিদ্যুৎকেন্দ্রের রাস্তা শুধু কোহেলিয়া নদীকেই ধ্বংস করেনি, সেই সঙ্গে আমাদের জীবিকা, আশা, ভবিষ্যৎ - সব ধ্বংস করেছে। এখন আমি দিনমজুরি করে কোনোমতে বেঁচে আছি।"

Matarbari Made in Japan for Section 5.jpg

জাপানই এশিয়ার একমাত্র দেশ যারা সক্রিয়ভাবে বিদেশে নতুন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে  বিনিয়োগ করার চিন্তা করছে।

Matarbari_MadeInJapan_logo_Reverse.png

জাপানের বিনিয়োগ ও কারিগরি দক্ষতা ছাড়া মাতারবাড়ি ১ ও ২ নির্মাণ সম্ভব না। তাই প্রকল্পগুলোর পরিবেশগত, মানবিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব সবই "জাপানেরই তৈরি।"

 

জাইকার ওডিএ লোনের জন্যই মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি সম্ভব হয়েছে। মাতারবাড়ি-২ নির্মাণে এই লোনটি  সম্ভবত ২০২২ সালের মে বা জুনের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে।

Broken Promise.png

ভগ্ন প্রতিশ্রুতিগুলো

নতুন মাতারবাড়িতে বিনিয়োগ ২০২১ সালের জাইকার প্রতিশ্রুতিকে লঙ্ঘন করে: জাইকা বলেছিল, এটি বাংলাদেশের এনার্জি ইকোনমিকে "নিম্ন- বা শূন্য-কার্বন রূপান্তর” প্রচারে সহায়তা করবে৷

 

এছাড়া জাপান আরও কিছু প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে।

 

প্রকল্পগুলো জাইকার নিজস্ব নিয়মগুলোই মানছে না। জাইকার পরিবেশগত ও সামাজিক বিবেচনার নিয়মনুযায়ী প্রকল্পের জন্য স্থানীয়দের যেকোন ক্ষতিপূরণ যথাযথভাবে এবং দ্রুত দেওয়ার কথা। কিন্তু স্থানীয়দের তীব্র প্রতিবাদের পরেও এসব বিষয় শুধু উপেক্ষা ও বিলম্বিতই হয়নি, এখনও অপূর্ণই রয়ে গেছে।

Empty Vows.png

ফাকা
বুলি

জাইকা যদি মাতারবাড়ি-২ এ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়, তবে আরও কয়েকটি সংস্থা তাদের নিজস্ব প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করবে। IHI-Toshiba-এর একটি কনসোর্টিয়াম সম্ভবত প্রকল্পটি উন্নয়নে সাহায্য করবে যদিও কিনা তোশিবা বলছে, তারা কার্বন নিঃসরণ কমানোর বৈশ্বিক প্রচেষ্টার সাথে সঙ্গতি রেখে নতুন কয়লা প্ল্যান্টের অর্ডার নেওয়া বন্ধ করবে

 

জাপানি আর্থিক উপদেষ্টা এসএমবিসি এবং আন্ডাররাইটার নেক্সিও বিতর্কিত এই প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

Forgotten Pledges.png

ভুলে যাওয়া অঙ্গীকার

এই অঞ্চলে কয়লাতে বিনিয়োগ বন্ধের ক্ষেত্রে জাপানের অবস্থান একদম শেষে।

 

মাতারবাড়িতে জাপানের বিনিয়োগের অর্থই হচ্ছে তাদের নিজেদেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা যা তারা গত বছর জি-৭ সম্মেলনে বিদেশে কয়লাতে বিনিয়োগ বন্ধ করা নিয়ে শপথ করেছিলো।

 

এমনকি চীন ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে, শি জিনপিংয়ের অঙ্গীকারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে গত বছর BRI কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য তহবিল বন্ধ করে দিয়েছে। এতে এশিয়ার শেষ কয়লা-তহবিলকারী দেশ হিসেবে একমাত্র জাপানই রয়ে গেছে।

 

বৈশ্বিক জলবায়ু নেতা হিসেবে আবারও জায়গা ফিরে পেতে জাপানকে অবশ্যই তার অঙ্গীকারগুলো অনুসরণ করতে হবে এবং অবিলম্বে মাতারবাড়ি-২ এ বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে।

Matarbari Made in Japan for Section 5.jpg

জাপান এবং জাইকা উভয়কে অবশ্যই জলবায়ু নিয়ে নিজেদের প্রতিশ্রুতিগুলো অনুসরণ করে কয়লাতে বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে।

১৪,০০০

মানুষের

অকাল মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে মাতারবাড়ি প্রকল্পের কারণে

৭০ লাখেরও

বেশি মানুষ

অত্যধিক মার্কারি এবং সালফার ডাই অক্সাইড নির্গমনের সংস্পর্শে আসার আশঙ্কা রয়েছে।

যথাক্রমে

পাঁচ এবং ছয়টি

বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য ও সংরক্ষিত বন গুরুতর বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে।

দৈনিক

২৭৭.২µg/m3

সালফার ডাই অক্সাইড নিঃসরিত হয় মাতারবাড়ি-১ থেকে যেখানে, WHO এর সীমা হলো ২০ µg/m3

মাতারবাড়ি ঋণের ফাঁদ

ভুল ধারণা ১

মাতারবাড়ি-২ প্রকল্পটি কম ব্যয়বহুল এবং সাশ্রয়ী।

মাতারবাড়ি-১ প্রকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ উদ্বেগজনক, যা কিনা  US$160/MWh। যদিও মাতারবাড়ি-২ প্রকল্পের নির্মাণ, ব্যয়ের হার কমিয়ে আনবে, তারপরও তুলনামূলক বাংলাদেশে সৌর বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। সৌর PV-এর জন্য শক্তির সমতলিত খরচ (LCOE) অনুমান করা হয়েছে US$54/MWh.

বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য

জাপানের প্রাক্তন পরিবেশ মন্ত্রী

শিনজিরো কোইজুমি

"আমি একটি সুষ্ঠু সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জাপানের ডিকার্বনাইজ করার যে লক্ষ্য সেটি তুলে ধরতে চাই।”

আরও
জানুন

Image by Dominik Vanyi

মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র: হুমকিতে পরিবেশ

ডেইলি স্টার (নভেম্বর ২০২১)

মাতারবাড়ি - মেড ইন জাপান ক্যাম্পেইনটি সমর্থন করছে

BWGED Logo.png
BELA Logo Color.png
FFF BD.jpg
JACSES.png
Waterkeeper-Bangladesh-Blue.png
GP-logo-2019-green-[web].png
Mighty Earth.png
Fridays for Future Japan
bottom of page